প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে!

ইসলাম বিশ্বজনীন শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবজাতির জন্য কল্যাণকামী পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ‘ইসলাম’ মানে আত্মসমর্পণ করা। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে তার কাছে আত্মসমর্পণ করে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি এবং নিরাপত্তা অর্জন করা। ইসলামপ্রিয় মুসলমানের পরিচয় দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (বুখারি : ৬৪৮৪; মুসলিম : ৪০)। তাই পৃথিবীতে সত্যিকারার্থে সত্য ও ন্যায়নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজজীবনে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বজায় রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে অপরিহার্য কর্তব্য ও ইমানি দায়িত্ব।

পবিত্র কোরানের সূরা আল-আরাফ অধ্যায় ৭ আয়াত ৫৬ তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِهَا وَ ادۡعُوۡهُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰهِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ অর্থঃ দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর বিপর্যয় ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করোনা, আল্লাহকে ভয়-ভীতি ও আশা আকাংখার সাথে ডাকো, নিঃসন্দেহে আল্লাহর রাহমাত সৎকর্মশীলদের অতি সন্নিকটে।

সুতরাং মানবসমাজে কোনোরকম নাশকতা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, সংঘাত, উগ্রতা, প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ইসলামে নিষিদ্ধ।

ইসলামের আলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচলিত আইনে সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের উপযুক্ত ন্যায়বিচার করা হলে আর কেউ নাশকতা, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে সাহস পাবে না। পবিত্র কোরআনে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকাণ্ডকে মহাঅপরাধ সাব্যস্ত করে কঠোর শাস্তির বিধান ঘোষিত হয়েছে।

পবিত্র কোরানের সূরা আন-নিসা অধ্যায় ৪ আয়াত ৯২ তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, وَ مَا كَانَ لِمُؤۡمِنٍ اَنۡ یَّقۡتُلَ مُؤۡمِنًا اِلَّا خَطَـًٔا ۚ وَ مَنۡ قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَـًٔا فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ وَّ دِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّصَّدَّقُوۡا ؕ فَاِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍ عَدُوٍّ لَّكُمۡ وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَتَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ؕ وَ اِنۡ كَانَ مِنۡ قَوۡمٍۭ بَیۡنَكُمۡ وَ بَیۡنَهُمۡ مِّیۡثَاقٌ فَدِیَۃٌ مُّسَلَّمَۃٌ اِلٰۤی اَهۡلِهٖ وَ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ مُّؤۡمِنَۃٍ ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَهۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ ۫ تَوۡبَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ عَلِیۡمًا حَكِیۡمًا অর্থঃ আর কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত (হলে ভিন্ন কথা)। যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)। আর সে যদি তোমাদের শত্রু কওমের হয় এবং সে মুমিন, তাহলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে। আর যদি এমন কওমের হয় যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি রয়েছে তাহলে দিয়াত দিতে হবে, যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিবারের কাছে এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করতে হবে। তবে যদি না পায় তাহলে একাধারে দু’মাস সিয়াম পালন করবে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমাস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

পবিত্র কোরানের সূরা আন-নিসা অধ্যায় ৪ আয়াত ৯৩ তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهٗ جَهَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡهَا وَ غَضِبَ اللّٰهُ عَلَیۡهِ وَ لَعَنَهٗ وَ اَعَدَّ لَهٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا অর্থঃ আর যে ইচ্ছাকৃত কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন।

অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা, তাদের জানমালের ক্ষতিসাধন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করাকে কবিরা গুনাহ আখ্যায়িত করে এবং এর ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পবিত্র কোরানের সূরা আল-মায়েদা অধ্যায় ৫ আয়াত ৩২ এ আল্লাহতায়ালা বলেন, مِنۡ اَجۡلِ ذٰلِكَ ۚۛؔ كَتَبۡنَا عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ اَنَّهٗ مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِالۡبَیِّنٰتِ ۫ ثُمَّ اِنَّ كَثِیۡرًا مِّنۡهُمۡ بَعۡدَ ذٰلِكَ فِی الۡاَرۡضِ لَمُسۡرِفُوۡنَ অর্থঃ এ কারণেই, আমি বনী ইসরাঈলের উপর এই হুকুম দিলাম যে, যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের নিকট আমার রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর যমীনে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী।

আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গোনাহর মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে আল্লাহর সাথে কাউকে শির্ক করা এবং কোন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা। পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া। মিথ্যা কথা বলা, অথবা বলেছেন মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। -সহীহ বুখারী, ৮৭/ রক্তপণ, পরিচ্ছেদঃ ৮৭/২. আল্লাহর বাণীঃ আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে হাদিস ৬৮৭১।

মানুষের জীবনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পবিত্র কোরআনের সূরা বনী-ইসরাঈল অধ্যায় ১৭ আয়াত ৩৩ এ ইরশাদ হয়েছে, وَ لَا تَقۡتُلُوا النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالۡحَقِّ ؕ وَ مَنۡ قُتِلَ مَظۡلُوۡمًا فَقَدۡ جَعَلۡنَا لِوَلِیِّهٖ سُلۡطٰنًا فَلَا یُسۡرِفۡ فِّی الۡقَتۡلِ ؕ اِنَّهٗ كَانَ مَنۡصُوۡرًا অর্থঃ আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করনা; কেহ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার দিয়েছি। কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; সেতো সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছেই।

হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৯৫)।

বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হলেই শুরু হয় নির্বিচার জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও মানবহত্যা। চলন্ত গাড়িতে ইট-পাথর ও রকমারি বোমার আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় জীবন্ত মানুষ। হরতাল-অবরোধ মানেই যেন গাড়ি পোড়ানো ও মানুষ মারা। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় ধ্বংসের মুখে জীবন-জীবিকা, বিপর্যস্ত মানুষ। জীবন হাতে নিয়ে প্রতিদিন কাজে নেমে স্বল্প আয়ের মানুষ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। রাস্তা কিংবা গাড়িতে কখন কার ওপর বোমার বিস্ফোরণ ঘটে এ ভয়ে সবাই তটস্থ।

রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নামে সহিংসতা, পিকেটারদের ঢিলের আঘাতে মৃত্যু, বোমা মেরে, আগুন জ্বেলে মানুষের জীবন নিরাপত্তাহীন করা, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ—এসব যাদের ওপর প্রয়োগ হচ্ছে তারা তো আমাদেরই কারও না কারও আত্মীয়স্বজন। এভাবে শান্তিময় পরিবেশকে ভীতিকর করে তোলা, জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করা, যে কোনো উপায়ে নিরপরাধ কাউকে হত্যা করা বা হত্যাচেষ্টা করা, অথবা অপরাধী কোনো ব্যক্তিকেও বেআইনিভাবে হত্যা করা বা হত্যাচেষ্টা করা হারাম।

মানবহত্যা ও মানুষের সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতির বিরুদ্ধে ইসলাম। ইসলাম অঙ্গহানি ও আত্মহত্যাকে মহাপাপ বলে ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে কোরআনে সূরা আন-নিসা অধ্যায় ৪ আয়াত ২৯ এ বলা হয়েছে, یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡكُلُوۡۤا اَمۡوَالَكُمۡ بَیۡنَكُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَكُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡكُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَكُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِیۡمًا অর্থঃ হে মু’মিনগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের ধন-সম্পদ গ্রাস করনা; কেবলমাত্র পরস্পর সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা কর তা বৈধ এবং তোমরা নিজেদের হত্যা করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল।

হত্যার প্ররোচক কারণ হিসেবে হিংসা-বিদ্বেষ-ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছে ইসলাম। সহীহ বুখারি ৬০৭৭, পরিচ্ছেদঃ ৭৮/ আচার-ব্যবহার, ৬২. সম্পর্ক ত্যাগ। আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোকের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাই-এর সাথে তিন দিনের অধিক এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু’জনে দেখা হলেও একজন এদিকে আরেকজন ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখবে। তাদের মধ্যে যে আগে সালাম দিবে, সেই উত্তম লোক। ৬২৩৭; মুসলিম ৪৫/৮, হাঃ ২৫৬০, আহমাদ ২৩৬৫৪, আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৫।

এমনকি হত্যার প্রারম্ভিক বিষয় তথা অস্ত্র দিয়েও কাউকে ভয় দেখাতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন তার ভাইয়ের দিকে অস্ত্র তাক না করে। কারণ সে জানে না, হয়তো শয়তান তার হাত থেকে তা বের করে দিতে পারে, ফলে সে জাহান্নামের গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সহীহ বুখারি, ৭৮/ আচার-ব্যবহার )।

কাউকে আগুনে পুড়িয়ে মারা বা মারার চেষ্টা জঘন্যতম কাজ। যারা এ কাজ করবে, তারা আল্লাহর রহমত থেকে অবশ্যই বঞ্চিত হবে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘনের কারণে, তদ্রূপ তারা কিয়ামতের দিন রাসুলের শাফায়াত পাবে না, রাসুলের কথা না মানার কারণে। অগ্নিসংযোগ ও আগুনে পুড়িয়ে মারার ফলে একসঙ্গে কয়েকটি অপরাধ সংঘটিত হয়, এর কোনো কোনোটি তো শিরকের পর্যায়ভুক্ত।

সহীহ বুখারী ৩০১৬, পরিচ্ছেদঃ ৫৬/১৪৯. আল্লাহ্ তা‘আলার শাস্তি দিয়ে কাউকে শাস্তি দেয়া যাবে না। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এক অভিযানে প্রেরণ করেন এবং বলেন, ‘তোমরা যদি অমুক ও অমুক ব্যক্তিকে পাও, তবে তাদের উভয়কে আগুনে জ্বালিয়ে ফেলবে।’ অতঃপর আমরা যখন বের হতে চাইলাম, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ ছাড়া কেউ আগুন দিয়ে শাস্তি দিতে পারবে না। কাজেই তোমরা যদি তাদের উভয়কে পাও, তবে তাদেরকে হত্যা কর।’ (২৯৫৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৮০৪)

হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো মানুষ, জীবজন্তু বা কোনো ফসল-গাছপালাকে আগুনে পোড়াতে নিষেধ করেছেন। নবী (সা.) আরও বলেন, ‘আগুন দ্বারা শুধু আল্লাহই শাস্তি দেবেন, আগুনের রব (আল্লাহ) ছাড়া আর কারও আগুন দ্বারা শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) কাফের-মুশরিকদের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধে কাউকে আগুনে পোড়ানোর অনুমতি দেননি। কারণ জাহান্নামে আল্লাহতায়ালা অপরাধীদের জন্য আগুনের শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। জাহান্নামকে আরবিতে ‘নার’ বা আগুন বলা হয়েছে। তাই এ শাস্তি কোনো মানুষ দিতে চাইলে এতে আল্লাহর বিশেষ শাস্তি প্রয়োগের ক্ষমতায় যেন তার সমাসীন হওয়ার দাবি চলে আসে। তাই কাউকে আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া নিষেধ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *