ঋণ শোধের আগে মারা গেলে করণীয়

ইসলামের দৃষ্টিতে ঋণ শোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ঋণ শোধ না করে মারা গেলে পরকালে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ করা ছাড়া মারা গেলে হাশরের ময়দানে নিজের নেকি থেকে ঋণের দাবি পূরণ করতে হবে।’ (বুখারি: ২৪৪৯) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘মুমিনের আত্মা ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় তার ঋণের কারণে, যতক্ষণ না তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করা হয়।’ (তিরমিজি: ১০৭৮) এমনকি আল্লাহর পথে শহীদ হওয়া ব্যক্তিরও যদি ঋণ থাকে, তবে তা শোধ করতে হবে। (নাসায়ি: ৪৬৮৪)

তাই ঋণ থাকলে তা জীবিত থাকতেই শোধ করা চাই। আর কোনোভাবেই শোধ সম্ভব না হলে ঋণদাতার কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে হবে অথবা কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা সংগঠনের শরণাপন্ন হয়ে ঋণ মওকুফ বা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই ঋণ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।

তবে কোনো ব্যক্তি যদি ঋণ রেখে মারা যায়, তাহলে মৃতের সব সম্পদ বিক্রি করে হলেও পরিবারকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। (বুখারি: ২৪৪৯) এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মৃতের অসিয়ত পূরণ করার পর এবং তার ঋণ পরিশোধের পর (তার সম্পত্তি বণ্টিত হবে)।’ (সুরা নিসা: ১১)

অবশ্য নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি থেকে মা-বাবার ঋণ শোধ করা সন্তানের জন্য আবশ্যক নয়। (মিনহাজুস সুন্নাহ: ৫/২৩২) তবে তা করলে তারা অশেষ সওয়াবের মালিক হবে। যদি ঋণগ্রস্ত মৃতের কোনো সম্পদ না থাকে এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরাও তা শোধ করতে সক্ষম না হয় বা না করে, তবে সমাজ, সংগঠন বা সরকার সেই দায়িত্ব বহন করবে। (বুখারি: ২২৯৮) এ ক্ষেত্রে সুদ না দিয়ে শুধু মূল অংশ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। (সুরা বাকারা: ২৭৮-২৭৯)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *